It seems we can’t find what you’re looking for. Perhaps searching can help.
সম্পাদকীয়
শরীফ চৌহান
মানুষ প্রকৃতির সন্তান। আদিমকাল থেকে আধুনিক সময় পর্যন্ত পৌঁছাতে অনেক পাল্টে গেছে বিশ্বের বাস্তবতা। একের পর এক শিল্প বিপ্লব আর জনসংখ্যার আধিক্য এই ধরিত্রীকে সমৃদ্ধির পাশাপাশি ফেলেছে দূষণের মারাত্মক ঝুঁকিতে। যত সময় যাচ্ছে তত হুমকির মুখে পড়ছে প্রকৃতি ও পরিবেশ। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন দরিদ্র ও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মানুষের জীবনকে করে তুলেছে মানবেতর। প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষ দূষণের শিকার হয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে। ক্রমবর্ধমান নগরায়ন ও শিল্পায়ন প্রযুক্তির ছোঁয়ায় কি দূষণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে? নাকি এখনই লাগাম টানতে হবে পরিবেশ ধ্বংসের বল্গাহীন রাক্ষসের?
কৃষি নির্ভর অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশও এই বাস্তবতার বাইরে নয়।আর বন্দরনগরী হওয়ায় শিল্পায়নের করাল থাবার অন্যতম বৃহৎ শিকার আমাদের প্রিয় চট্টগ্রাম। পাহাড়, নদী ও সমুদ্রঘেরা অপরূপ এই চট্টগ্রাম উন্নয়নের সাথে এক শ্রেণির মানুষের অতি লোভের বলি হয়ে প্রাকৃতিকভাবে বিপর্যস্ত এক অবস্থার মধ্যে যাচ্ছে। তার সাথে যুক্ত হয়েছে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন।
উন্নত দেশগুলোর উন্নয়নের কুফল ভোগ করছে আমাদের মতো উন্নয়নশীল ও মধ্য আয়ের দেশগুলো। অতিবৃষ্টি, অতিখরা, তীব্র শীত বা শীতের পরিমাণ কমে যাওয়া সব মিলিয়ে বেখেয়ালী এক আবহাওয়ার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি আমরা। নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের এই বাংলাদেশে ঋতুর বৈচিত্র্য আর আগের মতো দেখা যায় না। শুধু আমরা নই, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের দেশগুলোতেও প্রকৃতির পরিবর্তন লক্ষ্যনীয়। পরিবর্তনের নেতিবাচক ফল ভোগ করতে হয় মানুষকেই।
প্রকৃতি সুরক্ষায় জনতার যুথবদ্ধ প্রতিরোধ প্রয়োজন। জলবায়ুর পরিবর্তন ও প্রভাবশালীদের থাবা সত্ত্বেও বৃহত্তর চট্টগ্রামের প্রাণ-প্রকৃতি এখনো যতটুকু টিকে আছে তা রক্ষায় চলছে নানা প্রতিরোধ-আন্দোলন। এর অংশ হিসেবে আমাদের ক্ষুদ্র প্রয়াস ‘নিসর্গ নন্দন‘। এতে প্রকৃতির সাথে আমরা স্বাস্থ্যের মেলবন্ধনও ঘটাতে চেয়েছি।
আমাদের প্রথম প্রয়াসের সাথে শিক্ষক, গবেষকসহ চট্টগ্রাম নিয়ে ভাবেন এমন লোকজন তাঁদের মতামত তুলে ধরেছেন। জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব, এ থেকে উত্তরণে করণীয়কে আমরা সূচনা সংখ্যার মূল উপজীব্য করেছি।এছাড়া অপরিকল্পিত উন্নয়ন প্রকল্প এবং সেবা সংস্থাগুলোর সমন্বয়হীনতা কিভাবে নগর প্রকৃতিকে ভারসাম্যহীন করে তোলে তাও উঠে এসেছে কিছু লেখায়। শুধু কারণ অনুসন্ধান নয়, সংকট থেকে উত্তরণের জন্য কিছু সুপারিশও লেখাগুলোতে উঠে এসেছে।
ক্ষুদ্র প্রয়াসে শুরু হলেও আমরা এ প্রয়াসের ধারাবাহিকতা রাখতে চাই। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সুনির্মল প্রকৃতির প্রত্যাশা আমাদের।
সূচনা সংখ্যায় যারা লেখা, বিজ্ঞাপন, শ্রমসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা।