ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী
শিশু বয়সের ডায়রিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রতিরোধ করা সম্ভব। শিশুর খাওয়া-দাওয়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার সাথে করা গেলে, তাকে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা হলে, অনেকাংশেই শিশু ডায়রিয়া মুক্ত থাকে। শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে যেসব পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ সেসব হলোÑ
ক. খাবার-দাবার
১. শিশুকে ভূমিষ্ট হবার এক ঘণ্টা বা তারও আগে যত তাড়াতাড়ি পারা যায় সময়ের মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা । এবং প্রথম ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করানো।
২. ছয় মাস বয়স থেকে মাতৃদুগ্ধের পাশাপাশি ঘরে তৈরি পরিপূরক খাবার তৈরি করে খাওয়ানো। এসব খাবার যেন এনার্জি সম্পন্ন থাকে, মিশ্র-খাদ্য হতে তৈরি হয় (যেমন খিচুড়ি)। যাতে করে শিশু পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, চর্বি, আয়রণ এবং ভিটামিন সমৃদ্ধ সুষম খাদ্য প্রতিদিনকার খাবারে পায়। কমপক্ষে দুই বছর বয়স পর্যন্ত শিশুর বুকের দুধ পান অব্যাহত রাখা।
খ. হাইজিন
১. শিশুর খাবার তৈরির পূর্বে এবং শিশুকে খাবার পরিবেশনের আগে সাবান-জলে শিশু যত্নকারীর ভালোভাবে হাত ধুয়ে নেওয়া।
২. শিশুর খাবার তৈরি, সংরক্ষণ ও খাওয়ানোর সময় খাবার যেন জীবাণুমুক্ত নিরাপদ থাকে।
৩. শিশুর জন্য রাখা খাবার যাতে ধুলোবালি, মাছি বা তেলাপোকা এসব দ্বারা দূষিত না হয়, সেজন্য ঢাকনাযুক্ত পরিষ্কার পাত্র ব্যবহার করা।
৪. শিশুর পানি পান বা খাবার তৈরিতে ব্যবহৃত জল যেন পরিষ্কার ও নিরাপদ থাকে, সেরূপ ব্যবস্থা অবলম্বন। ডায়রিয়া মহামারিতে পানীয় জল যেন ভালোমতো ফুটিয়ে পান করাতে হবে।
৫. শিশুকে খেতে দেওয়া ফলমূল, শাকসবজি যেন ভালোমতো ধুয়ে ও পরিষ্কার করে পরিবেশন করা হয়।
গ. পরিবেশ
১. যথাযথ পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থাপনা
২. নিরাপদ পানির সুব্যবস্থা
৩. টয়লেট-এর হাইজিন
ঘ. ডায়রিয়ার টিকা
১. অল্প বয়সের শিশুর ডায়রিয়ার অন্যতম প্রধান কারণ রোটাভাইরাস জনিত ডায়রিয়া। রোটাভাইরাস প্রতিরোধক টিকা বর্তমানে পাওয়া যায়। শিশুর ছয়মাস বয়স পূর্ণ হওয়ার পূর্বে খাওয়ানো হলে, তা শিশুর এ ধরনের ডায়রিয়া প্রতিরোধে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
লেখক : অধ্যাপক ও সাবেক বিভাগীয় প্রধান
শিশুস্বাস্থ্য বিভাগ
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল